সাঁইজির বাণী

ফকির লালন সাঁই এর রচিত গান কে তার শিষ্য ভক্তরা সাইজির বানী হিসাবে গণ্য করে থাকে। লালন ফকির নিজে হস্তে কোন গান লিপিবদ্ধ করণ নাই। কথিত আছে যে তিনি যখন কোন গান রচনা করতেন তখন সে তার শিষ্য ভক্তদের ডাকতেন-এই তোরা কে কোথায় আছিস তাড়াতাড়ি আয় , “পোনা মাছের ঝাঁক এসেছে” শিশ্য রা নিকটে এলে তিনি নিজে গেয়ে শোনাতেন এবং শিস্যরা গান মুখস্ত করতেন। পরবর্তীতে শিষ্যদের ভিতর ফকির মনিরুদ্দিন সাঁই গান গুলো লিপিবদ্ধ করতেন সাইজির অজান্তে। কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদাহ কুঠি বাড়ি থাকা কালিন সময় ফকির মনিরুদ্দিন সাঁই এর লিখিত খাতা সংগ্রহ করে তা কপি করেছিলেন। সেই খাতাটি বর্তমানে শান্তিনিকেতনে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া সতিশ্চন্দ্র দাস, করুনাময় গোস্বামী, মোক্ষদাচরন ভট্টাচার্য, উপেন্দ্রনাথ মুখোপধ্যায়, সুবোধচন্দ্র মজুমদার, হরন্দ্রনাথ মণ্ডল, যতিন্দ্রনাথ সেঙ্গুপ্ত, কবি জসিমউদ্দিন, বসন্ত কুমার পাল্‌ ,মোহাম্মদ মুন্সুরউদ্দিন, উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মতিলাল দাস, খোন্দকার রিয়াজুল হক, এস,এম, লুতফর রহমান, সনত কুমার মিত্র, ক্যারল সলোমন , ফকির আনোয়ার হোসেন মন্টু সাঁই ,আবুল আহসান চৌধুরী ও শক্তিনাথ ঝা লালন সাঁই জির গান সগ্রহ ও গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করেছেন। “রবীন্দ্রনাথ- সংগৃহীত লালন শাহ্ ফকিরের কুড়িটি গান সর্বপ্রথম ‘প্রবাসী’র ‘হারামনি’- শীর্ষক বিভাগে প্রকাশিত হয় (প্রবাসী, ১৩২২, আশ্বিন- মাঘ সংখ্যা)। ইহার পূর্বে লালনের দুই- চারটি গান কোনো কোনো সংগীত-সংগ্রহে স্থান লাভ করিতে পারে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথই সর্বপ্রথম অতগুলি গান প্রকাশ করিয়া লালনের প্রতি সকলের দৃষ্টি বিশেষভাবে আকর্ষণ করেন । এই গানগুলি খুব সম্ভাব লালনের আখড়ায় রক্ষিত একটি খাতা হইতে নকল করিয়া লওয়া হয়, পরে রবীন্দ্রনাথ আকারে সেগুলি প্রকাশ করেন।“ – বাংলার বাউল ও বাউল গান, অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তবে ফকির লালন সাঁই কতগুলো গান রচনা করেছিলেন তার সঠিক হিসাব এখনো পর্যন্ত জানা যায় নি। বর্তমানে ফকির লালন সাঁই এর গান এর সমগ্র নামে অসংক্ষ সংকলন বাজারে পাওয়া যায়। এখানে আমাদের ধারণ কৃৎ ফকির লালন সাঁই এর পরম্পরা সাধু ফকির দের গাওয়া লালন বানী সংকলিত করা হয়েছে ।